হামাস-ইসরায়েল চুক্তিতে শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ সফল হোক

গাজায় দীর্ঘ দুই বছর রক্তপাত, ধ্বংস আর দুর্ভোগের পর অবশেষে আশার আলো দেখা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় হামাস ও ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপে একমত হয়েছে। এতে বন্দি বিনিময়, সৈন্য প্রত্যাহার, ত্রাণ সরবরাহ ও শান্তি প্রক্রিয়া শুরুর মতো বিষয় রয়েছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার মানুষের জন্য এটি স্বস্তির খবর।

প্রশ্ন হচ্ছে, এই চুক্তি কি সত্যিই গাজায় টেকসই শান্তি আনতে পারবে, নাকি আগের অনেক যুদ্ধবিরতির মতোই সাময়িক সমাধান হয়ে থাকবে। অতীতে দেখা গেছে, যতবার যুদ্ধবিরতি হয়েছে, ইসরায়েল প্রায় প্রতিবারই তা লঙ্ঘন করেছে।

অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এখনো অস্পষ্ট। ইসরায়েলি সৈন্য কখন গাজা ছাড়বে, হামাসের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কী হবে, যুদ্ধের পর গাজার প্রশাসন কে চালাবেÑএসব প্রশ্নের উত্তর পরিষ্কর নয়। ট্রাম্প বলছেন, এটি শান্তির প্রথম ধাপ মাত্র। কিন্তু সেই প্রথম ধাপ কতটা টেকসই হবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়। চুক্তি ঘোষণার পরও গাজায় ইসরায়েলি হামলার খবর পাওয়া গেছে।

এরপরও গাজার সাধারণ মানুষ এই ঘোষণায় আনন্দিত। বছরের পর বছর বোমাবর্ষণ, মৃত্যু আর অবরোধের পর তারা অন্তত কিছুটা আশাবাদী হতে পেরেছে। গাজায় মানুষ রাস্তায় নেমে উল্লাস করেছে। তাদের আশা, হয়তো এবার দুর্ভোগের অবসান আসবে।

বিশ্বের অনেক দেশ ও সংস্থা এই চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে। জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, তুরস্ক, কাতার, সৌদি আরব আশা প্রকাশ করেছে যে এটি মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তির পথ খুলে দিতে পারে।

গাজার মানুষ শুধু যুদ্ধবিরতি নয়, ন্যায় বিচার ও মর্যাদা চায়। তারা চায় হত্যাযজ্ঞের দায় নির্ধারণ হোক, ধ্বংসপ্রাপ্ত ঘরবাড়ি ও অবকাঠামো পুনর্গঠন করা হোক, এবং ভবিষ্যতে তাদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত হোক। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত এ সময় কেবল মধ্যস্থতার ভূমিকায় না থেকে বাস্তব সহায়তা নিশ্চিত করা।

শেষ পর্যন্ত শান্তি প্রতিষ্ঠা পাবে কিনা, তা নির্ভর করবে দুই পক্ষের রাজনৈতিক সদিচ্ছার ওপর। বাস্তবে শান্তি টিকিয়ে রাখতে হলে চুক্তির প্রতিটি শর্ত সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে এবং উভয় পক্ষকে দায়বদ্ধ থাকতে হবে। আমরা শান্তি প্রতিষ্ঠার এই উদ্যোগের সফলতা কামনা করি।

Related posts